প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, বিচার বিভাগের প্রতিষ্ঠানগত স্বাধীনতা দাবি করা মানে রাষ্ট্রের ওপর একক আধিপত্য বিস্তার করা নয়। এ বিষয়ে যে শঙ্কা রয়েছে, তা বাস্তবতার ভিত্তিতে নয়।
রবিবার (১০ আগস্ট) প্রয়াত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশের সাংবিধানিক ইতিহাসে কখনো বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের ওপর একক কর্তৃত্ব চাপিয়ে দেয়নি। বরং অতীতে দুর্বল বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর সমঝোতায় জড়িয়ে সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে।
তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের স্বাধীন সচিবালয় প্রতিষ্ঠা বিচার বিভাগের দীর্ঘদিনের দাবি। এটি নিয়ে বিতর্ককে ক্ষমতার ভারসাম্যের প্রেক্ষাপটে দেখা উচিত। গত পাঁচ দশকে বিচার বিভাগ সবসময়ই নির্বাহী ও আইন বিভাগের তুলনায় পিছিয়ে থেকেছে, যদিও অনেক সময় রাষ্ট্রের একমাত্র কার্যকর অঙ্গ ছিল বিচার বিভাগ।
যুক্তরাজ্যের ২০০৫ সালের কনস্টিটিউশনাল রিফর্ম অ্যাক্টের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ক্ষমতার পৃথকীকরণ বজায় রেখে পারস্পরিক সহযোগিতা রাখাই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। তার মতে, প্রকৃত স্বাধীনতা মানে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা, আধিপত্য নয়। এজন্য একটি স্বাধীন ও কার্যকর সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন, যা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. শরীফ উদ্দিন চাকলাদার। প্রধান বক্তা ছিলেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
মন্তব্য করুন