জন্ম থেকেই হাত-পা নেই—কিন্তু তাতে থেমে যায়নি লিতুন জিরার অগ্রযাত্রা। মুখ দিয়ে কলম ধরে লেখে, আর প্রতিটি পরীক্ষায় দেখিয়ে দেয় অদম্য মেধা ও আত্মবিশ্বাসের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এবারের এসএসসি পরীক্ষায়ও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে লিতুন, যেন নিজের সক্ষমতার আরেকটি চমকপ্রদ প্রমাণ রাখল সে।
লিতুন জিরা যশোরের মণিরামপুর উপজেলার সাতনল খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান ও জাহানারা বেগম দম্পতির কনিষ্ঠ সন্তান। স্থানীয় গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে সে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ফলাফল প্রকাশের পর লিতুনের পরিবারে বইছে আনন্দের জোয়ার। মেয়ের এ সাফল্যে গর্বিত বাবা-মা এবং শিক্ষকরা।
লিতুন জানায়, তার লক্ষ্য চিকিৎসক হওয়া। শুধু নিজের জীবনের জন্য নয়—সমাজের পিছিয়ে পড়া ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতেই সে এই স্বপ্ন দেখে। তার কথায়, “আমার শারীরিক সীমাবদ্ধতা আমাকে থামাতে পারেনি, আমি আরও দূর যেতে চাই।”
পূর্বে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষাতেও কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয় লিতুন। পেয়েছে বৃত্তি, শ্রেণির সেরা শিক্ষার্থী হিসেবে সম্মাননা, এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও রেখেছে উজ্জ্বল পদচিহ্ন। নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে অর্জন করেছে পুরস্কার ও স্বীকৃতি।
একাগ্রতা, সাহস এবং স্বপ্নের অটুট শক্তিকে সঙ্গী করে লিতুন জিরা আজ বাংলাদেশের সকল প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণার প্রতীক। তার পথচলা আমাদের শেখায়—ইচ্ছাশক্তিই মানুষের সবচেয়ে বড় শক্তি।
মন্তব্য করুন