বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীকে বহুল আলোচিত ১৭ বিয়ে কাণ্ডের অভিযোগে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় তাকে বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করার নির্দেশ জারি করে। একইসঙ্গে পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উপ বন সংরক্ষক) ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান মিঞাকে ভারপ্রাপ্ত ডিএফও হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল বিভাগীয় উপকূলীয় অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে।
এদিন বিকেলেই তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়। বরিশাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট হাফিজ আহম্মেদ বাবলু স্বপ্রণোদিত হয়ে মেট্রোপলিটন প্রথম আমলী আদালতে মামলাটি করেন। বিচারক মো. সাদিক আহম্মেদ মামলা আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মামলার পরবর্তী তারিখ ২০ নভেম্বর ধার্য করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, বিদেশে পড়াশোনা, চাকরির সুযোগ, বিমানবালা হওয়ার প্রলোভন কিংবা সম্পত্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি প্রতারণার মাধ্যমে একের পর এক বিয়ে করেছেন। ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় চাকরিরত অবস্থায় মোট ১৭ জন নারীকে বিয়ে ও প্রতারণার শিকার করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
বাদী অ্যাডভোকেট হাফিজ আহম্মেদ বাবলুর ভাষ্য অনুযায়ী, প্রতিটি বিয়েতে মুসলিম ফ্যামিলি আইন ১৯৬১-এর বিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে। প্রথম বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখে একাধিক বিয়ে করে তিনি ধর্মীয় মূল্যবোধ, সামাজিক সংস্কৃতি ও আইনকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় সুশীল সমাজের ব্যানারে বরিশাল নগরীর কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন হয়। সেখানে ঢাকার নাজনিন আক্তার শীলা, নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া, খুলনার নাসরিন আক্তার দোলনসহ আরও অনেকে নিজেদের কবির হোসেনের স্ত্রী দাবি করে প্রতারণার শিকার হওয়ার অভিযোগ তোলেন।
তাদের অভিযোগ, সর্বশেষ ২০২৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি খুলনার চাকরিজীবী খাদিজা আক্তারকে বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু বিয়ের পরদিনই খাদিজার বাবার সম্পত্তির অংশ লিখে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন কবির হোসেন।
বহুল আলোচিত এই ঘটনায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও আদালতের মামলার কারণে এখনো দেশের বিভিন্ন স্থানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন এই বন কর্মকর্তা।
মন্তব্য করুন