বঙ্গোপসাগরে ২২ মিনিটের ব্যবধানে দুবার কেঁপে উঠল ভূ-পৃষ্ঠ, রিখটার স্কেলে ৬.৩ ও ৬.৫ মাত্রার কম্পন
স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা ● ২৯ জুলাই ২০২৫
গভীর রাতে বঙ্গোপসাগরে পরপর দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। মাত্র ২২ মিনিটের ব্যবধানে ঘটে যাওয়া এই দুটি ভূমিকম্পের একটি ছিল ৬.৩ এবং অপরটি ৬.৫ মাত্রার। তবে এতে কোনো সুনামির আশঙ্কা নেই এবং এখন পর্যন্ত কোনো হতাহত কিংবা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (এনসিএস) জানিয়েছে, সোমবার (২৯ জুলাই) রাত ১২টা ১১ মিনিটে প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানে, যার মাত্রা ছিল ৬.৩। দ্বিতীয়টি ঘটে রাত ১টা ৪১ মিনিটে এবং সেটির মাত্রা ছিল ৬.৫। দুটি ভূমিকম্পেরই গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার।
প্রথম ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে। দ্বিতীয়টির কেন্দ্র ছিল গ্রেট নিকোবারের ক্যাম্পবেল বে থেকে প্রায় ৯৪ কিলোমিটার পশ্চিমে, যা নিশ্চিত করেছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এবং ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি)।
এদিকে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান ইনফরমেশন সার্ভিসেস (আইএনসিওইএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পগুলোর ফলে ভারতীয় উপকূলে সুনামির কোনো সম্ভাবনা নেই। তাৎক্ষণিকভাবে আন্দামান-নিকোবার, পশ্চিমবঙ্গ কিংবা ওড়িশার কোনো অঞ্চলে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। উপকূলীয় এলাকাগুলোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ইউএসজিএস জানিয়েছে, প্রায় ২৫ হাজার মানুষ হালকা মাত্রায় কম্পন অনুভব করলেও বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ভারতের ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই অঞ্চলটি ভূমিকম্প সংবেদনশীলতার সর্বোচ্চ মানচিত্র ‘জোন-৫’-এর অন্তর্ভুক্ত। এখানে অবস্থিত সুন্দা মেগাথ্রাস্ট টেকটোনিক সীমান্তে ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান প্লেট ও সুন্দা প্লেটের সংঘর্ষের ফলে প্রায়ই ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ দেখা যায়।
২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর এই অঞ্চলে ৯.১ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং পরবর্তী সুনামি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। সেই প্রাকৃতিক দুর্যোগে শুধু ভারতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
মন্তব্য করুন