বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
সোমবার (৩০ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত এই আলাপে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য এবং সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। প্রায় ১৫ মিনিট স্থায়ী এই ফোনালাপকে উষ্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং ফলপ্রসূ হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানান।
এটি ছাড়াও, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিখ্যাত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন ড. ইউনূস। সেই সংলাপের বিষয়বস্তু আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা না হলেও এটি প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা ও সহযোগিতা কেন্দ্রিক ছিল বলে জানা যায়।
এপ্রিল মাসে, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পণ্যের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি চিঠি পাঠান প্রধান উপদেষ্টা। চিঠিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য আনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং তিন মাসের জন্য শুল্ক কার্যকর না করার অনুরোধ করেন।
চিঠিতে ড. ইউনূস বলেন, “আমরা ১৭ কোটিরও বেশি মানুষের একটি দ্রুত বিকাশমান বাজার। যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানিতে আমরা অগ্রণী ভূমিকা নিতে চাই এবং এর মাধ্যমে পারস্পরিক বাণিজ্য আরও সম্প্রসারিত হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশই প্রথম দেশ যারা যুক্তরাষ্ট্রের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) আমদানিতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। ট্রাম্প প্রশাসন LNG রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর থেকেই এ খাতে সহযোগিতা বাড়াতে কাজ করছে বাংলাদেশ।
এছাড়া, চিঠিতে জানানো হয়, কৃষিপণ্যসহ মার্কিন পণ্যের জন্য একটি বিশেষ শুল্কমুক্ত বন্ডেড ওয়্যারহাউস চালুর পরিকল্পনাও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তুলা, গম, সয়াবিন, ভুট্টার মতো কৃষিপণ্য আমদানির মাধ্যমে মার্কিন কৃষকদের আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও আশা প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশে মার্কিন পণ্যে তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে কম শুল্ক আরোপ করা হয় উল্লেখ করে চিঠিতে জানানো হয়, নির্দিষ্ট কয়েকটি খাতে শুল্ক সম্পূর্ণভাবে শূন্য করার পাশাপাশি মেডিকেল যন্ত্রপাতি, গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর ইত্যাদি উচ্চ প্রযুক্তির পণ্যে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক হ্রাসের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এছাড়া আমদানি প্রক্রিয়ায় অশুল্ক বাধা কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে রয়েছে পরীক্ষার বিধিনিষেধ সহজ করা, লেবেলিং নীতিমালা হালকা করা, শুল্ক প্রক্রিয়া সরলীকরণ এবং বাণিজ্য সুবিধা সম্প্রসারণ।
মন্তব্য করুন