সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয় হস্তক্ষেপে ক্ষতিগ্রস্ত: জামায়াত আমির
“জুলাই শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনে চাকরি প্রাপ্য অধিকার, অনুকম্পা নয়”
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, ২৮ জুলাই
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “বাংলাদেশের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান অতীতের রাজনৈতিক সরকারগুলোর হস্তক্ষেপে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে জনগণকে। এই অবস্থা ভবিষ্যতে আর চলতে দেওয়া উচিত নয়।”
সোমবার (২৮ জুলাই) রাত ৭টা ৩৯ মিনিটে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বার্তায় এসব কথা বলেন তিনি। তিনি জানান, জনগণের ম্যান্ডেট পেলে জামায়াত এমন একটি কাঠামো গঠন করতে চায়, যেখানে “সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ দলীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত থেকে স্বতন্ত্র সংস্থার মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হবে।” এই বিষয়ে তার ভাষায়, “এ অবস্থান একেবারেই স্পষ্ট, এখানে কোনো অস্পষ্টতা নেই।”
শহীদ পরিবারকে চাকরি ‘কোটা নয়, অধিকার’
এর আগে ২৬ জুলাই শনিবার চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত “জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণসভা”তে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া প্রত্যেক পরিবারের সদস্যদের উপযুক্ত বিবেচনায় চাকরি দিতে হবে। এটি কোনো অনুকম্পা নয়, এটি তাদের প্রাপ্য অধিকার। পুনর্বাসনের জন্য রাষ্ট্রের এ দায়িত্ব এড়ানো অনৈতিক।”
তিনি ‘কোটা’ শব্দটি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “এটা কোটা নয়। কোটা হচ্ছে চৌদ্দগোষ্ঠীর মাথায় যুগ যুগ ধরে ঝুলিয়ে দেওয়া সুবিধা। শহীদ পরিবার তা চাননি। এটা আমাদের কর্তব্য, আমরা তাদের হাতে তুলে দেবো।”
“জুলাই যোদ্ধাদের অবদান অনস্বীকার্য”
জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ করে জামায়াত আমির বলেন, “জুলাই যোদ্ধারা না থাকলে আজ আমরা হয়তো কেরানীগঞ্জ বা কাসেমপুরের কারাগারে বন্দি থাকতাম। তাদের অবদান আমরা ভুলে যেতে পারি না।”
“জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এখনও হয়নি, দুঃখজনক”
শহীদদের স্বীকৃতি ও মর্যাদা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আজও জুলাই সনদ বাস্তবায়িত হয়নি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। শহীদদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হয়নি, এ নিয়ে আমরা আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত।”
তিনি জানান, “ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা চলছে, তবে এখনও কার্যত অগ্রগতি হয়নি। জামায়াত জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং শহীদ পরিবারগুলোর পাশে থাকার অঙ্গীকারে ওয়াদাবদ্ধ।”
শেষে তিনি বলেন, “প্রয়োজনে তাদের সম্মানের জীবন নিশ্চিত করতে আমরা ভিক্ষাও করব, কিন্তু ন্যায়বিচার ও পুনর্বাসনে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।”
মন্তব্য করুন