সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবি ঘিরে চরম আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ছবিতে দেখা যায়—লম্বা চুল, ঘন দাড়িতে একেবারে ভিন্ন চেহারার এক ব্যক্তি। পরে জানা যায়, তিনি আর কেউ নন—ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন এমন রূপে নিজেকে তুলে ধরলেন তিনি?
অবশেষে নিজের মুখেই রহস্য ভাঙলেন নয়ন।
এক সাক্ষাৎকারে রবিউল ইসলাম নয়ন বলেন, “হ্যাঁ, ছবিটি আমারই। ২০২২ সালে আমি যখন হাইকোর্ট থেকে জামিন নিতে যাওয়া নেতাকর্মীদের সহায়তা করতে যাই, তখনই আমাকে তুলে নেয় সরকার। প্রায় পাঁচ থেকে সাত দিন ধরে আমাকে গুম করে রাখা হয়েছিল।”
সেই ঘটনার পর তাকে দীর্ঘদিন কারাভোগ করতে হয়। কারাগার থেকে মুক্তির পর রাজপথে সক্রিয় থাকলেও একের পর এক হুমকি পেতে থাকেন তিনি। নয়নের ভাষায়, “চারপাশ থেকে বার্তা আসছিল—আমাকে পাওয়া গেলে আর জীবিত রাখা হবে না।”
সেই বাস্তবতায় জীবন রক্ষার জন্যই বদলে ফেলেছিলেন নিজের চেহারা।
“আমি দাড়ি রেখেছিলাম, চুল বড় করেছিলাম। শান্তিনগরের মোড়ে আমি মশাল মিছিল করেছি এই ছদ্মবেশেই। এটা ছিল একটা কৌশল—সরকারি নজর এড়িয়ে আন্দোলনে সক্রিয় থাকার জন্য,” বলেন নয়ন।
তবে তাঁর চেহারার এই পরিবর্তনের আরেকটি বাস্তব কারণও ছিল। তিনি জানান, “দীর্ঘ সময় বন্দি অবস্থায় থাকার কারণে সেলুনে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। ফলে দাড়ি ও চুল স্বাভাবিকভাবেই বড় হয়ে যায়। পরে মুখে ফাঙ্গাসও হয়।”
একপর্যায়ে চিকিৎসকের পরামর্শে দাড়ি কেটে ফেলেন তিনি। এখনো হালকা দাড়ি উঠলে ফাঙ্গাসের সমস্যা দেখা দেয় বলে জানান নয়ন।
স্লোগানকে নিজের অস্তিত্বের অংশ বলে মনে করেন তিনি।
“স্লোগান আমার মনের খোরাক, রাজপথ আমার খেলার মাঠ, আর জেলখানা আমার রাজনৈতিক পাঠশালা। আমাকে স্লোগান দেওয়া থেকে বিরত রাখা মানেই নিঃশ্বাস বন্ধ করে দেওয়া,” বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “আমি প্রেক্ষাপট অনুযায়ী অঙ্গভঙ্গি ও কণ্ঠের ভিন্নতায় স্লোগান দিই—যাতে কর্মীরা উদ্যমী থাকে, প্রোগ্রামে মনোযোগ ধরে রাখতে পারে। কারণ, বিপ্লবীরা কখনো নীরব থাকে না, তারা স্লোগান দিয়েই সামনে এগিয়ে যায়।”
মন্তব্য করুন