পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে ব্যবসায়ী সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার পর বিএনপিকে ঘিরে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা। ঘটনায় দলের অঙ্গসংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার ও বহিষ্কৃত হওয়ার পর দলের ভেতর-বাইরে চলছে আলোড়ন। এমন এক সময়েই বিএনপি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন মালয়েশিয়া বিএনপির সাবেক নেতা ও অ্যাক্টিভিস্ট ড. ফয়জুল হক।
শনিবার (১২ জুলাই) নিজের ফেসবুক পোস্টে ফয়জুল হক জানান, তিনি মালয়েশিয়া বিএনপির সহ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এখন সেই পদ থেকে পদত্যাগ করছেন। তবে তার এই পদত্যাগ ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
মালয়েশিয়া বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গত ২৯ জুন ড. ফয়জুল হককে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দলটির দপ্তর সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম রতন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে বিএনপির তৃণমূল নেতাদের একাংশ বলছেন, ফয়জুল হক আসলে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। সামাজিক মাধ্যমে জামায়াত নেতাদের সঙ্গে তার ছবি ছড়িয়ে পড়ায় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, তিনি জামায়াতের হয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তবে জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, তারা ফয়জুল হককে বিএনপির নেতা হিসেবে চেনেন না। জেলা সদস্য সচিব শাহাদাত হোসেন বলেন, “আমরা শুধু জানি উনি কায়েদ সাহেব হুজুরের নাতি। রাজনীতিতে উনার সক্রিয় উপস্থিতি আমরা দেখিনি।”
এই বিষয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে ড. ফয়জুল হক বলেন, “আমি অতীতে বিএনপির দায়িত্বে ছিলাম, তার প্রমাণ আমার কাছে আছে। তবে এখন আমি একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চাই।”
জামায়াতে যোগদানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেই। তবে রাজনীতিতে শেষ কিছু নেই। ভবিষ্যতে আদর্শগত মিল থাকলে কোনো সংগঠনে যুক্ত হতে পারি।”
নিজ জেলার ঝালকাঠি-১ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছার কথাও তিনি প্রকাশ করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত তার প্রকাশিত পোস্টার বা প্রচারণায় কোনো দলের প্রতীক বা নাম দেখা যায়নি।
ড. ফয়জুল হকের এই পদত্যাগ ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপথ নিয়ে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে আলোচনা। তিনি আদৌ জামায়াতে যুক্ত হবেন, না কি স্বতন্ত্র অবস্থানেই থাকবেন—তা সময়ই বলে দেবে।
মন্তব্য করুন