জুলাই বিপ্লবের পর শিক্ষা খাতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনরোষ চরমে ওঠার পর অবশেষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জুবায়েরকে অপসারণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে তথ্য ও সম্প্রচারবিষয়ক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সামরিক বিমান বিধ্বস্তের পর সারা দেশে শোকের আবহে যখন এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিতের প্রস্তাব দেয় আন্তঃশিক্ষা বোর্ড, তখন সেটি প্রথমে নাকচ করে দেন সচিব সিদ্দিক জুবায়ের। তার এমন সিদ্ধান্তে রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব রাত ২টার দিকে পরীক্ষা স্থগিতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
সরকারি সূত্র জানায়, কেবল পরীক্ষার ইস্যু নয়, সিদ্দিক জুবায়েরের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই বই ছাপার কাগজ কেনায় কমিশন বাণিজ্য, কলেজে পদায়নে আর্থিক লেনদেন, নিয়োগে অনিয়মসহ নানা অভিযোগ ছিল। বিশেষ করে গত বছর ৩০০ কোটি টাকার কাগজ ক্রয়ের প্রক্রিয়ায় কমিশন গ্রহণের অভিযোগে তিনি বিতর্কিত হন। এমনকি তাকে আগে দু’বার অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু হলেও সরকারের অভ্যন্তরীণ প্রভাবশালী মহলের কারণে তা থেমে যায়।
শিক্ষা বোর্ডের আইন অনুযায়ী, অনিবার্য পরিস্থিতিতে বোর্ড নিজ উদ্যোগে পরীক্ষা স্থগিত করতে পারে। করোনাকালে এ আইনেই অটোপাস ও বিকল্প মূল্যায়নের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। অথচ এবার সচিবের সিদ্ধান্তে বোর্ডকে পাশ কাটিয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে বাধ্য করা হয়, যা নিয়ে ক্ষোভ বাড়তে থাকে।
তাছাড়া, বদলি বাণিজ্যে জড়িত এক প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে প্রস্তাবিত কর্মকর্তাদের পছন্দসই দপ্তরে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার একক সিদ্ধান্তে বিতর্কিত “জুলাই কোটা” চালুর পর সমালোচনার মুখে সেটি সংশোধন করা হয়।
সিদ্দিক জুবায়েরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন