রাজধানীতে জামায়াতে ইসলামীর প্রথম একক জনসমাবেশের পর বিএনপি এখন পাল্টা কোনো কর্মসূচি দিচ্ছে না। বরং দলটি মনে করছে, প্রতিপক্ষের কর্মসূচির পাল্টা কর্মসূচিতে গেলে নিজেরাই দুর্বল প্রতীয়মান হবে, আর প্রতিপক্ষের গুরুত্ব বেড়ে যাবে। বিএনপি নেতৃত্বের মতে, দলটির রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক অবস্থান নতুন করে প্রমাণের কিছু নেই।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি এখন ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান’ স্মরণে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিক কর্মসূচির শেষ দিন ৬ আগস্ট ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ‘বিজয় মিছিল’। দলটি চায়, এই কর্মসূচিকে স্মরণকালের বৃহত্তম সমাবেশে পরিণত করতে, যাতে বর্তমান সরকারের ওপর গণচাপ সৃষ্টি হয় এবং নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দাবি আরও জোরালো হয়।
বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বলেন, “আমরা পাল্টাপাল্টি রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। সবাই যার যার রাজনৈতিক অধিকার অনুযায়ী কর্মসূচি পালন করছে—এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।”
উল্লেখ্য, জামায়াতে ইসলামী সম্প্রতি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ করে। যদিও বিএনপি বিদ্যমান ব্যবস্থায় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় এবং জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে না যাওয়ার বিষয়টিও অনেকটা পরিষ্কার।
এদিকে বিএনপির চলমান কর্মসূচিতে গণঅভ্যুত্থানে পেশাজীবী, নারী, ছাত্র, যুব ও শিশুদের ভূমিকা তুলে ধরা হচ্ছে বিভিন্ন আলোচনায়। এসব কর্মসূচির অন্যতম উদ্দেশ্য হলো জনমত সংগঠিত করে রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত থাকা।
বিজয় মিছিল সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে ঢাকাজুড়ে ব্যাপক জনসমাগম ঘটবে। মিছিলের সূচনা ও শেষ স্থান শিগগিরই জানানো হবে।”
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল জানান, বিজয় মিছিল ঘিরে শিগগিরই প্রস্তুতি সভা হবে। সেখানে রুট, সময়, এবং নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের পৃথক অবস্থান এবং বিএনপির গণঅভ্যুত্থান স্মরণে ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে রাজনৈতিক মাঠে আবারও সক্রিয় প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। তবে দুই দলই এখন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে—একটি সরাসরি নির্বাচনী বার্তা দিতে চায়, আরেকটি আন্দোলনের ধারায় প্রভাব তৈরি করতে চায়।
মন্তব্য করুন