নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বর্তমানে দেশের কোনো ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নন। তবে আইন অনুযায়ী আবেদন করলে এবং কমিশন সিদ্ধান্ত নিলে তিনি ভোটার হতে পারবেন— সেই সঙ্গে আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়া বা প্রার্থী হওয়াও সম্ভব হবে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “ভোটার নিবন্ধন আইন সবার জন্য সমান। কমিশন চাইলে ও তিনি আবেদন করলে তারেক রহমানকেও ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।”
ইসি সচিবের এই মন্তব্যের সমান্তরালে জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি নিয়েও এসেছে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সোমবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান— আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন না হওয়ার আশঙ্কা যে কিছু মহল তুলে ধরে, তা বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। খুব শিগগিরই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রেস সচিব জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রেকর্ডসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে থাকবে এবং সশস্ত্র বাহিনীর অভূতপূর্ব সমন্বিত উপস্থিতিও থাকবে। নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপার (এসপি) নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে এবং এসব নিয়ে বড় কোনো প্রশ্ন ওঠেনি বলেও তিনি দাবি করেন।
তার মতে, বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে এবং পুরো দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল। জুলাই চার্টার গ্রহণের ফলে নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে, যার ধারাবাহিকতায় দলগুলো একই সঙ্গে অনুষ্ঠিতব্য গণভোটের প্রস্তুতিও নিচ্ছে।
একইসঙ্গে তিনি এক দৈনিকের প্রতিবেদনে প্রকাশিত বিশ্লেষক জিল্লুর রহমানের মন্তব্যের সমালোচনা করেন। শফিকুল আলমের দাবি, অতীতের ১৯৯৬, ২০১৪, ২০১৮ বা ২০২৪ সালের মতো পরিস্থিতির তুলনা অযৌক্তিক— কারণ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তুতি ও স্বচ্ছতা ভিন্ন বাস্তবতা নির্দেশ করে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীরাও মনে করেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগসমূহ নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান ছাড়া আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক স্বাভাবিকতা ফিরে পাওয়া কঠিন। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোও দলটির সহিংস কৌশলের ওপর নির্ভরতার ইঙ্গিত দেয়।
জিল্লুর রহমানের সাম্প্রতিক অনলাইন ভিডিওগুলো নিয়েও আপত্তি তোলেন প্রেস সচিব। তার অভিযোগ— এসব ভিডিওর বিভিন্ন অংশে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয় এবং বিতর্কিত ব্যক্তিদের বক্তব্য অযথা প্রচার করা হয়।
শেষে তিনি বলেন, “জনগণ তাদের বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেবে। তবে দুটি বিষয়ে আমি নিশ্চিত— আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে না; আর অন্তর্বর্তী সরকার ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করবে, ইনশাআল্লাহ।”
মন্তব্য করুন