মিটফোর্ডে নির্মম হত্যার শিকার ব্যবসায়ী সোহাগের সন্তানদের হৃদয়বিদারক আহ্বান
ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সোহাগের পরিবার বিচার চেয়েছে। নিহতের কিশোরী কন্যা সোহানা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমরা এখন এতিম হয়ে গেছি, এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াব? বাবাকে যারা হত্যা করেছে, আমরা তাদের বিচার চাই।”
শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে সোহাগের মরদেহ ঢাকা থেকে নিজ এলাকা বরগুনার ইসলামপুরে নেওয়া হয়। সেখানে তার মা আলেয়া বেগমের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাত্র সাত মাস বয়সে বজ্রপাতে সোহাগ তার বাবাকে হারান। এরপর মা আলেয়া বেগম জীবিকার প্রয়োজনে ঢাকায় পাড়ি জমান। বহু কষ্টে সোহাগ বড় হয়ে উঠেন এবং পরে মিটফোর্ড এলাকায় ‘মেসার্স সোহানা মেটাল’ নামে একটি দোকান চালু করেন। স্ত্রী লাকি বেগম ও সন্তানদের নিয়ে কেরানীগঞ্জের মডেল টাউন এলাকায় বসবাস করতেন।
পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সোহাগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মাসিক দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হতো। চাঁদা না দেওয়ায় কয়েকবার দোকানে তালা মেরে দেওয়া হয়। ৯ জুলাই বিকেলে তাকে বাসা থেকে ডেকে নেয় চাঁদাবাজরা। এক পর্যায়ে নির্মমভাবে মারধরের পর পাথর দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়।
সোহাগের বোন ফাতেমা বেগম বলেন, “ভাইয়ের ব্যবসায়িক সাফল্য অনেকেই সহ্য করতে পারছিল না। চাঁদা না দেওয়ার অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে।”
স্ত্রী লাকি বেগম বলেন, “আমার স্বামী কারও ক্ষতি করেনি। শুধু চাঁদা দিতে অস্বীকার করেছিল বলেই তাকে এমনভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখন আমার সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে বাঁচতে হয়।”
এই নির্মম হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় তুলেছে। সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছেন— চাঁদার বিরুদ্ধে মুখ খুললে এভাবেই কি মরতে হবে?
মন্তব্য করুন