বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে পদত্যাগ করেছেন প্রবাসী রাজনীতিবিদ ও সমাজকর্মী ড. ফয়জুল হক। শনিবার (১২ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
বিবৃতিতে তিনি জানান, দলের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থানের সঙ্গে তার আদর্শিক বিরোধ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাবলির প্রেক্ষাপটে তিনি বিএনপির নেতৃত্ব ও নীতির মধ্যে একটি “বামঘেঁষা প্রবণতা” লক্ষ্য করছেন, যা তাঁর বিশ্বাস ও রাজনৈতিক দর্শনের পরিপন্থী।
ড. ফয়জুল হক জানান, ২০১৫ সালে তিনি বিএনপির মালয়েশিয়া শাখার সহ-সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ২০১৮ সালে ঝালকাঠী-১ ও ঝালকাঠী-২ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময়ে ইসলামপন্থী ও বৈষম্যবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
তিনি বলেন, “যারা একসময় বিএনপির পক্ষে ছিলেন—তাঁদের বিরুদ্ধেই আজ সরাসরি অবস্থান নেওয়া হচ্ছে, যেটি আওয়ামী লীগের বক্তব্যের সঙ্গে বিস্ময়করভাবে মিল খায়।” এমন অবস্থানে তিনি নিজেকে “রাজনীতিতে কোণঠাসা” মনে করছেন।
পদত্যাগের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি কখনো পাথর দিয়ে মানুষ হত্যা, সন্ত্রাস বা চাঁদাবাজিকে সমর্থন করিনি। আমি চাই সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে পারি—দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে দেশ, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং সাধারণ মানুষের অধিকারের পক্ষে রাজনীতি করতে চাই।”
ড. ফয়জুল হক আরও জানান, “জুলাই বিপ্লবের” পর দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, যা দলের আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল। এজন্য তিনি নিজেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যাতে তার অবস্থানের কারণে দল বিব্রত না হয়।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা জানান।
নিজ রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনি ঝালকাঠী-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসন থেকে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চান। তিনি সকল রাজনৈতিক মতের জনগণের সমর্থন নিয়ে মানবতা, সত্য এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের পক্ষে সংসদে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
শেষে তিনি লেখেন, “আমি আর কোনো দলীয় ছায়ায় নয়, একজন স্বাধীনচেতা দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে মৃত্যুর আগপর্যন্ত সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকতে চাই। সকলের কাছে দোয়া কামনা করছি।”
মন্তব্য করুন