কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আব্বাস উদ্দিন কমান্ডার—যিনি অতীতে প্রকাশ্য জনসভায় আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের অনেকেই এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ।
জানা গেছে, বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রমিজ উদ্দিন লন্ডনি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেই শূন্য পদে নিয়োগ পেয়েছেন আব্বাস উদ্দিন, যিনি সম্পর্কে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার আপন বোনজামাই। দীর্ঘ ১৬ বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি।
স্থানীয় সূত্র বলছে, আব্বাস উদ্দিন বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের পক্ষে কাজ করেছেন। এমনকি সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী তাজুল ইসলামের পক্ষে মাঠে নেমেছিলেন। এ সম্পর্কিত ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, আব্বাস কমান্ডার মেঘনা উপজেলার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, টেন্ডারবাজি ও মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। তার ছেলে আব্দুল কাদের মাদক নিয়ন্ত্রণে জড়িত বলেও কয়েকটি সূত্র দাবি করছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাদের। তিনি দাবি করেন, “আমি শুধু ঠিকাদারি কাজ করি। মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে।”
বিএনপি নেতাদের একাংশ মনে করছেন, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার প্রভাবেই আব্বাস উদ্দিন কমান্ডারকে পদ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা অভিযোগ করেন, সেলিম ভূঁইয়া তার পরিবারের সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে দলীয় কাঠামো নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আব্বাস উদ্দিন বলেন, “আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। একটি মহল আমাকে ও অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়াকে হেয় করতে অপপ্রচার চালাচ্ছে। নৌকার সঙ্গে ছবি থাকলেই কেউ আওয়ামী লীগ হয়ে যায় না।”
এ বিষয়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান জানান, “দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্টভাবে বলেছেন, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজির প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের কাছে তথ্য এলে আমরা তা হাইকমান্ডে পাঠাবো।”
অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার বক্তব্য নিতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
বিএনপির ভেতরে এসব বিতর্ক ইতিমধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দলে অনুপ্রবেশ ও সুযোগসন্ধানী নেতৃত্বে বিএনপির সাংগঠনিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
মন্তব্য করুন