“তুলনা ঠিক হয়নি”—পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে শেখ হাসিনার নৃশংসতার তুলনায় দুঃখ প্রকাশ আসিফ নজরুলের
স্টাফ রিপোর্টার:
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে শেখ হাসিনার ‘নৃশংসতা’র তুলনা করে বিতর্কের মুখে দুঃখ প্রকাশ করেছেন আইন উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার বিষয়ে আয়োজিত একটি আলোচনা সভায় তিনি যে মন্তব্য করেন, তা ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
সভায় তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা ও তার দোসররা বাংলাদেশে যে ধরনের জঘন্য অপরাধ করেছে, তা এমনকি ১৯৭১ সালের পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অপরাধের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে।”
সমালোচনার পরপরই দুঃখ প্রকাশ
বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর, রাত ৭টা ৩১ মিনিটে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে আসিফ নজরুল একটি পোস্ট দিয়ে বলেন—তুলনাটি ছিল অনভিপ্রেত এবং অনুচিত। তিনি লিখেন,
“শেখ হাসিনার নৃশংসতা অবিশ্বাস্য। লাশ ও আহত মানুষকে আগুনে পোড়ানো, নির্বিচারে নারী-কিশোর-শিশু হত্যা, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে বেসামরিক মানুষ হত্যা, মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতর তরুণকে গুলি করে হত্যা, এমনকি হাসপাতালে চিকিৎসা না দিয়ে হত্যা করার নির্দেশ—সবকিছুতেই তার সম্পৃক্ততা ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “যুদ্ধের ময়দানেও এসব কর্মকাণ্ড গুরুতর মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু তাই বলে শেখ হাসিনার নৃশংসতার সঙ্গে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর অপরাধের তুলনা করা ঠিক হয়নি আমার। দুটোই জঘন্যতম অপরাধ। আমার বক্তব্যে কেউ যদি মনে করে থাকেন, আমি একাত্তরের হত্যাযজ্ঞকে খাটো করে দেখেছি—তাদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।”
নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের স্বীকৃতি
এই পোস্টটি তার নিজের বলেই নিশ্চিত করেছেন আসিফ নজরুল। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মালিকানা নিশ্চিত করেন।
প্রতিক্রিয়ায় মিশ্র মত
সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই তার মূল বক্তব্যের নৃশংসতার চিত্র আঁকার অংশের সঙ্গে একমত পোষণ করলেও, তুলনামূলক মন্তব্যটিকে অযৌক্তিক ও ইতিহাসবিরোধী বলে উল্লেখ করেছেন। দুঃখ প্রকাশে কেউ কেউ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেও, কেউ কেউ একে ‘চাপের মুখে পিছু হটা’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন