৪৯টি ব্যাংক হিসাবের বিপরীতে ৫৫ কোটির জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, ২৮ জুলাই
১৪ হাজার কোটি টাকার উৎস অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাক মিয়ার ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৮ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমানের আদালতে রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে বিচারক বলেন, “আসামি ও রাষ্ট্রের স্বার্থে সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে।” পরে তার চার দিনের রিমান্ড অনুমোদন করেন আদালত।
এদিন আসামিকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, “আসামির বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ১৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকার লেনদেন পাওয়া গেছে। এই বিপুল অঙ্কের টাকার উৎস জানতেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।”
দুদকের পক্ষের কৌঁসুলি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জানান, “লাক মিয়ার বিরুদ্ধে ৫৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ রয়েছে। তার বৈধ আয়ের প্রমাণ মিলেছে মাত্র ৩ কোটি টাকা। এছাড়া ঘুষ ও দুর্নীতির তথ্যও যাচাই করা হচ্ছে। প্রয়োজনে মানি লন্ডারিং আইনে আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী মোবারক হোসেন রিমান্ড বাতিলের আবেদন জানিয়ে বলেন, “লাক মিয়া একজন পুরনো ব্যবসায়ী। ১৯৯০ সাল থেকে ব্যবসা করছেন, ২০১১ সালে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার পৈতৃক সম্পত্তিও রয়েছে। এত বছর ধরে সম্পদ থাকলে এনবিআর আগে ব্যবস্থা নিত। তাছাড়া তার হৃদযন্ত্রে পাঁচটি রিং রয়েছে। জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ রাখা যেত।”
তবে আদালত দুপক্ষের বক্তব্য শুনে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ৬ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) লাক মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চেয়ারম্যান লাক মিয়ার ৪৯টি ব্যাংক হিসাবে ১৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব লেনদেনের উৎস ও বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তদন্ত শুরু করে সংস্থাটি।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তার অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ৫৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা, যার বেশিরভাগই জ্ঞাত আয়বহির্ভূত।
মন্তব্য করুন