📰
আলো দেখছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা: ২০২৬-এ শুরু, চীনের সরাসরি অংশগ্রহণ
ঢাকা, ২৭ জুলাই:
দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দোদুল্যমানতা, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বাঁধা এবং অভ্যন্তরীণ উদাসীনতা কাটিয়ে অবশেষে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। ১২ হাজার কোটি টাকার এই মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হবে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে, যা বাস্তবায়নে অংশ নেবে বাংলাদেশ ও চীন সরকার যৌথভাবে।
চীনের ঢাকাস্থ দূতাবাসের ডাইরেক্টর অব দ্য পলিটিক্যাল সেকশন জং জিংয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যেই তিস্তা অববাহিকা এলাকায় মাঠপর্যায়ের জরিপ শুরু করেছে। তাঁরা মতবিনিময় করেছেন বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ, তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন এবং সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত নদী তীরবর্তী মানুষের সঙ্গে।
🌊
তিস্তা সংকট: এক নজরে
তিস্তা নদী নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংকটটি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের ৫টি জেলা—নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার জন্য জীবিকা, বাসস্থান ও খাদ্য নিরাপত্তার বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাফিয়ার রহমান বলেন—
“২০১৪ সাল থেকে শুষ্ক মৌসুমে ভারত তিস্তার সব পানি অন্যায়ভাবে প্রত্যাহার করে নেয়, আর বর্ষায় একসঙ্গে গজলডোবার সব কপাট খুলে দিয়ে ভয়াবহ বন্যা ঘটায়।”
এতে প্রতিবছর ভাঙন, বন্যা ও ফসলি জমি ধ্বংস হয়ে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা, বলে জানিয়েছে রিভারাইন পিপলের একটি গবেষণা।
🗣️
জনতার দীর্ঘ আন্দোলনের ফল
তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন,
“দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আমরা তিস্তা মহাপরিকল্পনার দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। অতীতে আওয়ামী লীগ সরকার এই ইস্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়ে প্রতিশ্রুতি দিলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।”
“বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যে পরিকল্পনা নিচ্ছে, সেখানে তিস্তা পাড়ের মানুষের চাওয়ার প্রতিফলন ঘটেছে।”
🏗️
মহাপরিকল্পনা: কী থাকবে?
যদিও এখনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি, তবে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে:
প্রস্তাবিত চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে অক্টোবরের পর, জানিয়েছেন পরিবেশবাদী আইনজীবী রিজওয়ানা হাসান।
🇨🇳
চীনের আগ্রহ ও কূটনৈতিক বার্তা
চীনের প্রতিনিধি দল রাজনৈতিক দল ও জনগণের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করে একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—
তারা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বিনিয়োগকারী নয়, বরং জনসম্পৃক্ত একটি উন্নয়ন সহযোগী হিসেবেও এগোচ্ছে।
এটি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কেও এক নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
🧭
বিশ্লেষণ: কী বলছে বাস্তবতা?
✅ ইতিবাচক দিক:
⚠️ সতর্কতা প্রয়োজন:
🔚 উপসংহার:
তিস্তা শুধু একটি নদী নয়, এটি উত্তরাঞ্চলের প্রাণরেখা। বহু বছরের দুঃসহ বাস্তবতা, অবহেলা ও রাজনৈতিক খেলার অবসান ঘটিয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনা আলোর মুখ দেখার দ্বারপ্রান্তে। এবার প্রয়োজন জনগণের স্বার্থ ও প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রেখে প্রকল্প বাস্তবায়ন।
মন্তব্য করুন