খাগড়াছড়ি জেলা সদরের এক এলাকায় ছয় যুবকের বিরুদ্ধে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়া তরুণী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পুলিশ এরইমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে, যাদের সবাই স্থানীয়ভাবে স্বেচ্ছাসেবক ও শ্রমিক দলের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে। তবে দলীয় পরিচয় অস্বীকার করেছে বিএনপি।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি রথযাত্রা উপলক্ষে আয়োজিত এক মেলায় অংশ নিতে গিয়ে ওই তরুণী এই বিভীষিকাময় ঘটনার শিকার হন। রাতে বাড়ি ফিরতে না পেরে তিনি কাকার বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানেই অভিযুক্ত ছয় যুবক হানা দিয়ে ‘অবৈধ সম্পর্ক’-এর অভিযোগে তার কাকাতো ভাইকে বেঁধে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে মেয়েটিকে। এছাড়া ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেয় তারা।
বাড়ি ফিরে বিষয়টি গোপন রেখে তরুণী বিষপান করেন। পরে গুরুতর অবস্থায় খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জ্ঞান ফেরার পর পরিবারের কাছে ঘটনার বিস্তারিত খুলে বলেন তিনি।
ঘটনার পরপরই ভুক্তভোগীর বাবা ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ভোরে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—সদরের একটি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আরমান হোসেন (৩২), সদস্য ইমন হোসেন (২৫), এনায়েত হোসেন (৩৫) এবং শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন (৩২)। পলাতক রয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুনির ইসলাম (২৯) ও ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল ইসলাম (২৩)।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার বলেন, “ঘটনার শিকার তরুণীর চিকিৎসায় আমরা পরিবারকে সহায়তা করছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পাশে আছি। তবে দলীয় পরিচয়ের বিষয়টি বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “রাত ৯টার দিকে একজন কিশোরীকে আমরা ভর্তি করি। বিষক্রিয়াজনিত জটিলতায় তার কিডনি আক্রান্ত হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে।”
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, “ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
মন্তব্য করুন