ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হল শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কর্মী মোহাম্মদ আবু সায়ীদ সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছেন। শনিবার (১২ জুলাই) সকালে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ ঘোষণা দেন।
পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও তার ছাত্রসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নানা অভ্যন্তরীণ অসঙ্গতির কারণেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁর ভাষায়, “ছাত্রদল একটি এমন রাজনৈতিক সংগঠন, যার মাদার সংগঠন বিএনপি মূলত পরিবারতন্ত্রের ঘেরাটোপে বন্দী। যেখানে কাউন্সিলের মাধ্যমে দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচন হয় না। ভবিষ্যতে দলের নেতৃত্ব একটি পরিবারের হাতেই কেন্দ্রীভূত থাকবে—এমন বাস্তবতা গণতন্ত্রের পরিপন্থী।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, সংস্কারমুখী যেকোনো উদ্যোগেই দলীয়ভাবে বাধা দেওয়া হয়। ডাকসু নির্বাচনেও ছাত্রদলের ভুমিকা ছিল নিষ্ক্রিয়। তাঁর মতে, “যে দলে গণতন্ত্র নেই, সেই দল জনগণকে গণতন্ত্র কীভাবে দেবে?”
পদত্যাগপত্রে সায়ীদ দলের ভেতরের নানা বৈষম্য ও অসঙ্গতির কথাও তুলে ধরেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “ভোলায় ছাত্রদল নেত্রী ঈপ্সিতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর কেন তার প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখানো হয়নি? শুধুমাত্র দল থেকে পদত্যাগ করলেই কি একজনের প্রতি ন্যূনতম দায়িত্ববোধও শেষ হয়ে যায়?”
তিনি ছাত্রদলের নেতৃত্ব ও আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন, “যখন আমরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে অনশন করছিলাম, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের এক নেতা আমাকে কটাক্ষ করেন—আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাই নাকি জামায়াত-শিবির?” তাঁর বক্তব্য, ছাত্রদলের রাজনীতি এখন ‘প্রোগ্রামভিত্তিক’ হয়ে গেছে, যেখানে অছাত্র ও সিনিয়রদের আধিপত্য স্পষ্ট।
তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতিও প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “আপনি যদি ব্রিটিশ সংসদীয় গণতন্ত্র দেখে থাকেন, তাহলে দেশের তরুণ প্রজন্মকে কিছু মডেল উপহার দিন। আমরা পরিবর্তনের আশা করেছিলাম, কিন্তু সব আশাই ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।”
সবশেষে মোহাম্মদ আবু সায়ীদ নিজের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে ব্যক্তিগত বিবেকের আহ্বান হিসেবেই দেখিয়েছেন। দল থেকে বিদায় নিলেও তিনি চান, তাঁর তোলা প্রশ্নগুলোর জবাব একদিন নেতৃত্ব থেকে কেউ দেবেন।
মন্তব্য করুন