Fahim hassan
৩০ জুলাই ২০২৫, ৩:৫০ অপরাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ
পাঠক সংখ্যা ১৪২ জন

‘এই এদের ধরেন তো’- দুই সাংবাদিককে ওসি

সাংবাদিকদের সঙ্গে অশালীন আচরণ ও গ্রেপ্তারের হুমকি, ওসি আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩০ জুলাই ২০২৫

রংপুরের গঙ্গাচড়া হিন্দুপল্লিতে হামলার ঘটনায় অনুসন্ধান করতে গিয়ে দুই সাংবাদিকের সঙ্গে অশালীন ও হুমকিস্বরূপ আচরণের অভিযোগ উঠেছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

ঘটনাটি ঘটে বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে কিশোরগঞ্জ থানা চত্বরে অবস্থিত গোলঘরে। অভিযোগকারী দুই সাংবাদিক হলেন– কালবেলা পত্রিকার রংপুর প্রতিনিধি রেজওয়ান রনি এবং প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক জহির রায়হান।

ঘটনা শুরু অনুসন্ধান থেকে

সাংবাদিকরা জানান, হামলার ঘটনাটি কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের সীমানা ঘেঁষা হওয়ায় তাঁরা ঘটনার বিস্তারিত জানতে থানায় যান। স্থানীয়দের সূত্রে তারা জানতে পারেন, হামলার দিন সকাল থেকেই কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে মানববন্ধনের ডাক দেওয়া হয়, যা দুপুরে সিঙ্গেরগাড়ি বাংলাবাজারে বিক্ষোভে রূপ নেয়।

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করলে ওসির ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

থানার গোলঘরে ওসি আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে আলাপের সময় সাংবাদিকরা জানতে চান, বিক্ষোভের দিন কতজন পুলিশ ঘটনাস্থলে ছিলেন। এ নিয়ে ওসি প্রথমে দ্বিধান্বিত প্রতিক্রিয়া দেন এবং পরবর্তীতে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন,

“উসকানি দিতে আসছে ওরা। সাংবাদিকেরা এগুলো করছে। রাজনীতিকরাও করতে পারে। শুধু শুধু পুলিশকে দোষ দিলে হবে না।”

ওসি আরও বলেন, “আপনাদের যোগ্যতা থাকলে ভালো জায়গায় কিছু করতেন, এভাবে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করতেন না।” একপর্যায়ে তিনি উচ্চস্বরে বলেন, “এই এদের ধরেন তো!” এবং উপস্থিত উপপরিদর্শক মহসিনকে নির্দেশ দেন সাংবাদিকদের আটক করতে।

এসআই মহসিন পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করে দুই সাংবাদিককে থানা চত্বর থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেন।

সাংবাদিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া

ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরপিইউজে)। সংগঠনের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক বলেন,

“পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের গালিগালাজ ও গ্রেপ্তারের হুমকি দেওয়া গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার শামিল।”

তিনি আরও বলেন, “ওসি আশরাফুল ইসলামের আচরণ বর্তমান ফ্যাসিবাদী দমননীতির প্রতিচ্ছবি। তাকে দ্রুত প্রত্যাহার করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে হবে, অন্যথায় সাংবাদিক সমাজ আন্দোলনে নামবে।”

পুলিশের অবস্থান

এ বিষয়ে জানতে নীলফামারীর পুলিশ সুপার এএফএম তারিক হাসান খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো প্রশ্নেরও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

অপরদিকে, সাংবাদিক ইউনিয়নের দাবি–এ ঘটনার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর নিরপেক্ষতা ও পেশাগত শিষ্টাচার নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তারা দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষণা দিতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি: রিয়াদের বাড্ডার বাসা থেকে আরও ৩ লাখ টাকা উদ্ধার

জামায়াত আমিরের খোঁজ নিলেন প্রধান উপদেষ্টা

শেখ রেহানাসহ তিন সন্তানেরও বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

নাহিদের বক্তব্যে সাদিক কায়েমের প্রতিক্রিয়া

শিগগিরই নির্বাচনের সময় ঘোষণা হবে: আইন উপদেষ্টা

যা কিছু হোক, নির্বাচনে দেরি হবে না: প্রেস সচিব

আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন ট্রাম্প, জানালেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

শিবির নেতা সাদিক কায়েমকে নিয়ে নাহিদের পোস্ট

শিবির, সাদিক কাইয়ুম এবং ‘ক্যু পরিকল্পনা’ নিয়ে নাহিদের পোস্ট জাতীয় | 31st July, 2025 1:07 pm জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া সমন্বয়কদের সাবেক সংগঠন ও অভ্যুত্থানে শিবিরের ভূমিকা নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন নাহিদ ইসলাম। একইসঙ্গে, শিবির নেতা সাদিক কায়েম এবং পাঁচ আগস্টের আগে আর্মি ক্যু পরিকল্পনা নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেয়া এক পোস্টে এসব বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি। পোস্টে শিবির নেতা সাদিক কায়েমের বক্তব্যকে ‘মিথ্যাচার’ উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, সম্প্রতি একটা টকশোতে তিনি বলেছেন ছাত্রশক্তির গঠনপ্রক্রিয়ায় শিবির যুক্ত ছিল, শিবিরের ইনস্ট্রাকশনে আমরা কাজ করতাম। এটা মিথ্যাচার। এরপর তিনি বলেন, ‘গুরুবার আড্ডা’ পাঠচক্রের সাথে জড়িত একটা অংশ এবং ঢাবি ছাত্র অধিকার থেকে পদত্যাগ করা একটা অংশ মিলে ছাত্রশক্তি গঠিত হয়। সাথে জাবির একটা স্টাডি সার্কেলও যুক্ত হয়। একটা নতুন ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুবার আড্ডা পাঠচক্রে দীর্ঘসময় ধরে কাজ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে আট বছর রাজনীতি করছি। ফলে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব সংগঠন ও নেতৃত্বকে আমরা চিনতাম এবং সকল পক্ষের সাথেই আমাদের যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছিল। সেই কারণে ঢাবি শিবিরের সাথেও যোগাযোগ ছিল। যোগাযোগ, সম্পর্ক বা কখনও সহযোগিতা করা মানে এই না যে তারা আমাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল। সাদিক কায়েম বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সমন্বয়ক ছিল না জানিয়ে নাহিদ বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি এই পরিচয় ব্যবহার করেছেন। অভ্যুত্থানে শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণেই সাদিক কাইয়ুমকে প্রেস ব্রিফিং এ বসার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সাদিক কাইয়ুমরা অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ঢালাও প্রচারণা করেছে এই অভ্যুত্থান ঢাবি শিবিরই নেতৃত্ব দিয়েছে, আমরা সামনে শুধু পোস্টার ছিলাম। অভ্যুত্থানে শিবিরের ভূমিকা কেউ অস্বীকার করে নাই। কিন্তু এই অভ্যুত্থান শিবিরের একক নয়, শিবিরের ইনস্ট্রাকশন বা ডিরেকশনও হয় নাই। আমরা সব পক্ষের সাথে যোগাযোগ করেই সিদ্ধান্ত নিতাম। আর কারা ক্ষমতার ভাগ বাঁটোয়ারা করতে চাইছে, গোষ্ঠী স্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে সে বিষয়ে অন্যদিন বলবো বলেও জানান এনসিপির এই নেতা। আর্মি ক্যু নিয়েও মুখ খুলেছেন এনসিপির আহ্বায়ক। তিনি বলেন, গত বছরের ২ আগস্ট রাতে জুলকারনাইন সায়েররা একটা আর্মি ক্যু করে সামরিক বাহিনীর এক অংশের হাতে ক্ষমতা দিতে চেয়েছিল। এ উদ্দেশে কথিত সেইফ হাউজে থাকা ছাত্র সমন্বয়কদের চাপ প্রয়োগ করা হয়, থ্রেইট করা হয় যাতে সে রাতে ফেসবুকে তারা সরকার পতনের একদফা ঘোষণা করে আর আমাদের সাথে যাতে আর কোনো যোগাযোগ না রাখে। রিফাতদের বিভিন্ন লেখায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের বক্তব্য ছিল একদফার ঘোষণা মাঠ থেকে জনগণের মধ্য থেকে দিতে হবে। আর যারা এভাবে চাপ প্রয়োগ করছে তাদের উদ্দেশ্য সন্দেহজনক। আমাদের ভিতর প্রথম থেকে এটা স্পষ্ট ছিল যে ক্ষমতা কোনোভাবে সেনাবাহিনী বা সেনাবাহিনী সমর্থিত কোনো গ্রুপের কাছে দেওয়া যাবে না। এতে আরেকটা এক-এগারো হবে এবং আওয়ামী লীগ ফিরে আসার সুযোগ তৈরি হবে এবং আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটাকে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত গণঅভ্যুত্থান হিসেবে সফল করতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সামনে আগাতে হবে। পাঁচ অগাস্ট থেকে আমরা এ অবস্থান ব্যক্ত করে গিয়েছি বলেও জানিয়েছেন নাহিদ। একই পোস্টে মির্জা ফখরুলের একটি দাবিকেও অসত্য বলে উল্লেখ করেছেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সম্প্রতি একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন জাতীয় সরকারের কোনো প্রস্তাবনা ছাত্রদের পক্ষ থেকে তাদের দেয়া হয় নাই। তারা অন্য মাধ্যমে এ প্রস্তাবনা পেয়েছিল। এই বক্তব্যটি সত্য নয়। নাহিদের দাবি, ৫ আগস্ট রাতের প্রেস ব্রিফিং এ আমরা বলেছিলাম আমরা অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার করতে চাই। সেই প্রেস ব্রিফিং এর পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের সাথে আমাদের ভার্চুয়াল মিটিং হয় সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় সরকার ও নতুন সংবিধানের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তারেক রহমান এ প্রস্তাবে সম্মত হননি এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের দিয়ে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সাজেশন দেন। আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কথা বলি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে। এরপর, ৭ আগস্ট ভোরবেলা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বাসায় আমরা উনার সাথে অন্তর্বর্তী সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে আলোচনা করি। উপদেষ্টা পরিষদ শপথ নেবার আগে জনাব তারেক রহমানের সাথে আরেকটি মিটিং এ প্রস্তাবিত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা হয়।

তাসকিনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ প্রত্যাহার করলেন বন্ধু

১০

ইরান থেকে জ্বালানি কেনায় ছয় ভারতীয় কোম্পানির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

১১

৩ বিভাগে ভারি বৃষ্টির আভাস, ভূমিধসের শঙ্কা

১২

ভারতের ওপর শুল্ক বসিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে বড় চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের

১৩

প্লট দুর্নীতির ৩ মামলায় শেখ হাসিনা-জয়-পুতুলের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

১৪

ভেঙে গেছে আতাই নদীর বাঁধ, শতাধিক পরিবার পানিবন্দি

১৫

পাসপোর্ট পাবেন না তিন শ্রেণির লোক

১৬

আফ্রিকান নারীদের শরীরে ক্যানসার ছড়াচ্ছে ত্বক ফর্সাকারী পণ্য

১৭

৩ আগস্ট নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার ঘোষণা

১৮

মুরাদনগরে বিএনপি-এনসিপি পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ১০

১৯

‘বাংলাদেশের অবস্থা ভারতের চেয়ে ভালো, তারা কেন ভারতে আসবে?’

২০