মোহাম্মদপুরে বিতর্কিত ওসির পক্ষে মানববন্ধনে মাদক কারবারিদের উপস্থিতি!
স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী ইফতেখার হাসানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ওঠার পর তার পক্ষে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে ওই মানববন্ধনে উপস্থিত ব্যক্তিদের পরিচয় ঘেঁটে দেখা গেছে, তাদের অধিকাংশই এলাকার আলোচিত মাদক কারবারি, ছিনতাইকারী ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য বা তাদের আত্মীয়স্বজন।
সোমবার (২৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টায় মোহাম্মদপুর টাউন হল এলাকার জান্নাত হোটেলের সামনে “মোহাম্মদপুরের সর্বস্তরের জনতা” ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ ব্যক্তির বিরুদ্ধেই মোহাম্মদপুর থানা এলাকাতেই একাধিক মামলা রয়েছে।
সম্প্রতি স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষার্থী সংগঠনের ব্যানারে ওসি আলী ইফতেখারের বিরুদ্ধে একাধিক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। তার বিরুদ্ধে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাংকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ উঠে। এমনকি অভিযোগ রয়েছে, তিনি ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে একটি মাদকের মামলা গায়েব করেন। এসব নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর উল্টো এবার মাদক সংশ্লিষ্ট চক্র তার পক্ষে রাস্তায় নামে।
মানববন্ধনে কারা ছিলেন?
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইকবাল ওরফে কসাই ইকবাল—যিনি জেনেভা ক্যাম্পের ৬/২৪ রোডে একটি সক্রিয় মাদক স্পট পরিচালনা করেন। তিনি আলোচিত মাদক কারবারি বিল্লালের বড় ভাই এবং তার বিরুদ্ধেও একাধিক মাদক মামলা রয়েছে।
আরও উপস্থিত ছিলেন মমতাজ আশরাফী, যিনি জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সোহেল ওরফে বুনিয়া সোহেল-এর ছোট ভাই কাল্লুর চাচা শ্বশুর। মাদক ব্যবসায় সোহেল অনুপস্থিত থাকলে তার ব্যবসার দেখভাল করেন মমতাজ।
উপস্থিত ছিলেন খোকন নামে আরও একজন, যিনি বুনিয়া সোহেলের আরেক সহযোগী চুয়া সেলিমের শালা। খোকন গজনবী রোডে একটি কাঠের দোকানের পাশে ইয়াবা, হেরোইন ও গাঁজার কারবার চালান বলে স্থানীয়রা জানায়।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইরফান ওরফে চারকু ইরফান, জেনেভা ক্যাম্পের ৮ নম্বর সেক্টরের শীর্ষ মাদক কারবারিদের একজন। তার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে মানববন্ধনের উদ্দেশ্য নিয়ে
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, একজন বিতর্কিত কর্মকর্তাকে রক্ষায় যাদের অবস্থান সেই মানববন্ধনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অত্যন্ত যৌক্তিক। অপরাধে জড়িত চক্রের প্রকাশ্য সমর্থনপ্রাপ্ত একজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মানববন্ধনের এই রূপ স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও পুলিশের নিরপেক্ষতার প্রশ্নে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
মন্তব্য করুন