জাতিসংঘে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক: সম্পর্ক জোরদারে একমত বাংলাদেশ-পাকিস্তান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক শীতলতা কাটিয়ে এবার সম্পর্ক জোরদারে দৃঢ় সংকল্প প্রকাশ করেছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ—বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।
সোমবার (২৮ জুলাই) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে চলমান আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার দ্বিপাক্ষিক এক বৈঠকে বসেন। এটি ছিল ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর থেকে দুই দেশের চতুর্থ শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক।
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের প্রতিশ্রুতি
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদারে অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি বিস্তৃত পর্যালোচনা করেন এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ঐকমত্যে পৌঁছান।
দুই নেতা জনগণের মধ্যে সম্পর্ক ও সংযোগ বৃদ্ধির গুরুত্বও তুলে ধরেন এবং অদূর ভবিষ্যতে উচ্চপর্যায়ের সফর বিনিময়ের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান।
ফিলিস্তিন সংকটে সংহতি ও দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে অবস্থান
বৈঠকে গাজায় চলমান মানবিক সংকট এবং ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন দুই পররাষ্ট্র নীতিনির্ধারক। তারা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি অটল সংহতি জানিয়ে বলেন, চলমান সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে কার্যকর ও তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা জরুরি।
বিশেষ করে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে একমাত্র গ্রহণযোগ্য পথ হিসেবে পুনর্ব্যক্ত করেন তারা।
সম্পর্ক উষ্ণতার পেছনে গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী প্রেক্ষাপট
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করে। দীর্ঘদিনের উত্তেজনার অবসান ঘটিয়ে বাস্তবমুখী ও অগ্রগতিমূলক সম্পর্ক গড়ার পরিবেশ তৈরি হয়।
এই ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি ঢাকায় সফর করেন এবং বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
ঐতিহাসিক ভিসামুক্ত চুক্তি
সেই বৈঠকে কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার সংক্রান্ত একটি ঐতিহাসিক চুক্তি সই হয়। এটি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও রাষ্ট্রীয় যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মন্তব্য করুন