আজ ২৯ জুলাই, বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাঘ দিবস ২০২৫। এ বছরের প্রতিপাদ্য— “বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি, সুন্দরবনের সমৃদ্ধি”—ঘিরে বাংলাদেশের বন অধিদপ্তর নানা আয়োজনে দিনটি পালন করছে।
রাজধানীর বন ভবনের হৈমন্তি মিলনায়তনে এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ, গবেষক ও বন সংরক্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরাও অংশ নেবেন।
সাম্প্রতিক জরিপ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ অংশের সুন্দরবনে বর্তমানে বাঘের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৫টি। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত চলা এ জরিপে অত্যাধুনিক ক্যামেরা ট্র্যাপ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। ১২১০টি ক্যামেরা ৬০৫টি গ্রিড এলাকায় ৩১৮ দিন রেখে সংগৃহীত ১০ লাখের বেশি ছবি-ভিডিও বিশ্লেষণে ৭,২৯৭টি বাঘের পৃথক ছবি পাওয়া গেছে—যা দেশে এর আগে কখনও দেখা যায়নি।
এ জরিপে ভারত, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞ দল সহায়তা করে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী তথ্য যাচাই করা হয়।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৫ সালের আগে দেশে বাঘের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। ২০০৪ সালের এক জরিপে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৪০টি। কিন্তু বনদখল, চোরাশিকার, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে সেই সংখ্যা ক্রমেই কমে আসে। ২০১৫ সালের একটি জরিপে দেখা যায়, বাঘের সংখ্যা নেমে আসে ১০৬-এ। তবে সাম্প্রতিক সংরক্ষণ উদ্যোগ এবং সচেতনতা কার্যক্রমের ফলে বাঘের সংখ্যা আবার কিছুটা বাড়ছে, যা আশাজাগানিয়া।
২০১০ সালে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত ‘টিগার সামিটে’ বিশ্ব বাঘ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর ২৯ জুলাই বিশ্বের ১৩টি বাঘ-আবাসী দেশ একযোগে এ দিবসটি পালন করে।
বন অধিদপ্তর বলছে, সুন্দরবনের বাঘ শুধু দেশের জন্য নয়, বৈশ্বিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাঘের টিকে থাকা মানেই জীববৈচিত্র্য ও বনজ সম্পদের টিকে থাকা।
মন্তব্য করুন