গুলশানে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দুই ভাই রাজশাহীর, ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
“ওদের জীবনধারা একদম আলাদা, বিশ্বাসই করতে পারছি না” — বাবা
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, ২৮ জুলাই
রাজধানীর গুলশানে আওয়ামী লীগের সাবেক এক সংসদ সদস্যের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে দুজন আপন ভাই, রাজশাহীর বাসিন্দা এবং একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
গ্রেপ্তার দুই ভাই হলেন সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব। তাদের স্থায়ী ঠিকানা নাটোর জেলার গোপালপুরে হলেও গত এক দশক ধরে পরিবারসহ রাজশাহীর খড়খড়ি এলাকায় বসবাস করছেন। দুই ভাইয়ের বাবার নাম এসএম কবিরুজ্জামান, যিনি পেশায় একটি গ্যাস ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী।
এক সময় টিউশনি, পরে রাজনীতি
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের শুরুতে সিয়াম ও সাদাব টিউশনি করে নিজেদের খরচ চালাতেন। কিন্তু কিছুদিন আগে সেই পেশা ছেড়ে রাজনীতিতে জড়ান। এরপরই তারা ঢাকায় আলোচিত একটি চাঁদাবাজি মামলার অন্যতম আসামি হয়ে পড়েন।
বাবা এসএম কবিরুজ্জামান বলেন, “দুই ছেলে আগে টিউশনি করত। কিছুদিন ধরে জানি, রাজনীতি করছে। এরপরও তাদের নিয়মিত টাকা পাঠাই। রোববার সকালে শুনলাম, ওরা চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার। বিশ্বাসই করতে পারছি না। ওদের জীবনধারা একদম আলাদা—নামাজ পড়ে, দাঁড়ি রাখে। টাকা-পয়সার জন্য ওরা চাঁদাবাজি করবে, এটা কল্পনাও করতে পারি না।”
সহগ্রেপ্তার আরও দুই ছাত্রনেতা
সিয়াম ও সাদাব ছাড়াও গ্রেপ্তার হওয়া অন্য দুই ব্যক্তি হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান। চারজনকেই আদালত সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে। চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পর সংগঠন থেকেও তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
ভালো ছাত্র থেকে আসামির কাঠগড়ায়
সিয়াম ও সাদাব রাজশাহীর খড়খড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। এই স্কুলের শিক্ষক এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজশাহী মহানগর সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মোবাশ্বের আলী বলেন, “ওরা তো খুব ভালো ছাত্র ছিল। এমন ঘটনায় ওদের নাম শুনে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি।”
মামলার অগ্রগতি
গুলশান থানায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা রাজধানীর অভিজাত এলাকায় চাঁদা দাবি করে আতঙ্ক তৈরি করছিল। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা চলবে।
মন্তব্য করুন