🔍
বাংলাদেশের ঋণচাপ: ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রেকর্ড ঋণ পরিশোধ
সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৪০৮৭ মিলিয়ন (৪ দশমিক ০৮ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে—দেশের ইতিহাসে এটি সর্বোচ্চ। আগের বছরের তুলনায় এটি প্রায় ২১% বেশি। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
📊
পরিশোধের বিভাজন:
- মূলধন পরিশোধ: ২৫৯৫ মিলিয়ন ডলার (বৃদ্ধি ২৯%)
- সুদ পরিশোধ: ১৪৯১ মিলিয়ন ডলার (বৃদ্ধি ১১%)
📉
কেন বাড়ছে চাপ?
- গত এক দশকে নেয়া বড় অবকাঠামো প্রকল্প ও বাজেট সহায়তা ঋণের অনুগ্রহকাল শেষ হচ্ছে।
- যেমন: রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প-এর কিস্তি আগামী ১-২ বছরের মধ্যেই শুরু হবে।
- রাজস্ব আয় দুর্বল, ফলে বিদেশি ঋণের ওপর নির্ভরতা দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
⚠️
বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ:
- অনেক প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়া।
- মাসরুর রিয়াজের মতে, ২০১৬-১৭ থেকে অনেক প্রকল্প বাস্তবতা বিবেচনায় না এনে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
🌐
আন্তর্জাতিক চাপ ও পরিস্থিতি:
- কোভিড-পরবর্তী পরিস্থিতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এবং ডলার সংকটের প্রভাব রয়েছে।
- স্বল্প মেয়াদে উচ্চ সুদে ঋণ নেওয়া হয়েছে বাজেট সহায়তার নামে, যা এখন কিস্তিতে পরিণত হয়েছে।
🧾
নতুন ঋণ চুক্তি ও অর্থছাড়:
- ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নতুন ঋণচুক্তি: ৮৩২৩ মিলিয়ন ডলার (কম)
- অর্থছাড়: ৮৫৬৮ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের ১০২৮৩ মিলিয়নের তুলনায় কমেছে।
🏦
বড় ঋণদাতারা:
- বিশ্বব্যাংক: ২৮৪০ মিলিয়ন ডলার (১০০০ মিলিয়ন বাজেট সহায়তা)
- এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক: ২০০০ মিলিয়ন ডলার (সর্বোচ্চ অর্থছাড়)
- জাপান: ১৮৯০ মিলিয়ন ডলার
🛑
চ্যালেঞ্জ ও করণীয়:
- অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এখনই সময় ঋণ ব্যবস্থাপনায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের।
- “ঋণ নেওয়ার” আগে দেখতে হবে:
- প্রকল্পটি অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক কিনা
- পরিশোধযোগ্য কিনা সময়মতো
- রাষ্ট্রীয় রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের উপর এর প্রভাব কতটুকু
✅
উপসংহার:
বাংলাদেশ এখন বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থাপনায় একটি সংকটজনক মোড়ে দাঁড়িয়ে। ইতিহাসের সর্বোচ্চ ঋণ পরিশোধের এই রেকর্ড ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা হতে পারে, যদি এখনই বাস্তবসম্মত, স্বচ্ছ এবং লাভজনক ঋণ ব্যবস্থাপনা না গড়ে তোলা হয়।