Fahim hassan
১ অগাস্ট ২০২৫, ১:৪০ অপরাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ
পাঠক সংখ্যা ২৫ জন

পর্যটকবাহী হাউসবোটে ফেরি করে মদ বিক্রি

টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সীমান্ত পর্যটনস্পটে হাউসবোটে চলছে বিদেশি মদ বিক্রি, বিপাকে চালকরা

প্রকাশিত: ১ আগস্ট ২০২৫ | নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় টাঙ্গুয়ার হাওর, নিলাদ্রী লেক ও জাদুকাটা নদীর পাড়ে হাউসবোটে চলছে প্রকাশ্যে বিদেশি মদ বিক্রি। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয়, এই বেআইনি কার্যক্রমে ব্যবহার করা হচ্ছে ১০-১২ বছরের কিশোরদের। এতে বিপাকে পড়েছেন হাউসবোট মালিক ও চালকরা।

পর্যটন স্বর্গে মদের দৌরাত্ম্য

প্রতিদিন হাজারো পর্যটক টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ঘুরতে যান। এসব পর্যটকবাহী হাউসবোট সাধারণত সুনামগঞ্জ জেলা শহর বা তাহিরপুর সদর থেকে যাত্রা করে টাঙ্গুয়ার হাওর হয়ে নিলাদ্রী লেক ও শেষ দিনে জাদুকাটা নদীতে পৌঁছায়।

হাউসবোট কোনো পর্যটন ঘাটে পৌঁছা মাত্রই নৌকায় করে কয়েকজন শিশু উঠে পড়ে। তারা বোতলভর্তি বিদেশি মদ নিয়ে হাউসবোটে এসে সরাসরি পর্যটকদের কাছে জানতে চায়— “মাল লাগবে? যেকোনো ব্র্যান্ড দিতে পারব।”

চক্ষু খুলে দেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা

শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে লাউড়েরগড় পাড়ে এমন ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন এক পর্যটকবাহী হাউসবোটের ম্যানেজার তোফাজ্জল হোসেন শাওন। তিনি জানান,

“হাউসবোটটি নদীর পাড়ে পৌঁছার পরপরই কয়েকজন ১০-১২ বছর বয়সী ছেলে হঠাৎ উঠে পড়ে। তাদের কাছে ছিল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদের বোতল। পর্যটকদের উদ্দেশ্যে তারা বলে, ‘লাল পানি লাগবে?’ আমি ছবি তুলতেই তারা দ্রুত পালিয়ে যায়।”

চালক ও মালিকদের উদ্বেগ

হাউসবোট ‘তরঙ্গ বিলাশ’–এর চালক জানে আলম বলেন,

“আমরা মদ বিক্রি করি না, তবুও এসব ছেলেপেলেরা এসে হাউসবোটের গায়ে লেগে থাকে। বলে—‘মামা লাল পানি লাগবে? দিয়া দিব।’ এতে আমাদের পর্যটকদের সামনে বিব্রত হতে হয়।”

তিনি আরও জানান, শুধু টাঙ্গুয়ার হাওর নয়, বারেকটিলা, শিমুল বাগান, লাউড়েরগড়— সব জায়গায় একই অবস্থা। স্থানীয় কিছু অসাধু চক্র এই কাজ নিয়ন্ত্রণ করছে।

সংগঠনের উদ্বেগ

তাহিরপুর নৌ-পর্যটন শিল্প সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ রব্বানী বলেন,

“মাদক এখন এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে হাউসবোটগুলো মাদকচক্রের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। আগে বড়রা বিক্রি করত, এখন ছোট ছোট ছেলেরা নিয়ে আসছে। এতে পর্যটনের পরিবেশ ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

পুলিশের হুঁশিয়ারি

তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন,

“পর্যটন এলাকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্টের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’। মাদক ব্যবসায়ী কিংবা সেবনকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযান চলছে, চলবে।”

সম্পাদকীয় মন্তব্য

টাঙ্গুয়ার হাওর ও এর আশপাশের এলাকাগুলো দেশের অন্যতম জনপ্রিয় প্রাকৃতিক পর্যটন গন্তব্য। এই এলাকার পরিবেশ, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং পর্যটনের ইতিবাচক ইমেজ রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি, স্থানীয়দের সচেতনতা ও পর্যটকদের সচেতনতাই পারে এই অপরাধ বন্ধ করতে।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বেরোবিতে ২০২৪-২৫ সেশনের চূড়ান্ত ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

এবার শচীনকেও ছাড়িয়ে গেলেন জো রুট

আজ জামায়াত আমিরের ওপেন হার্ট সার্জারি

৫ আগস্টের মধ্যেই ঘোষিত হবে ঘোষণাপত্র: মাহফুজ আলম

সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদা নিতে গিয়ে ধরা

‘ষড়যন্ত্রমূলক’ বৈঠকের তদন্ত চলছে : ডিএমপি

মার্কিন শুল্ক কমলো, যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

আদালতে দুই বাংলাদেশির পক্ষে রায়, ক্ষুব্ধ ইতালির প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশকে শুল্কছাড়, ভারতের পোশাক বাজারের শেয়ারে বড় ধস

অন্তর্বর্তী সরকারকে সাধুবাদ দিলেন মির্জা ফখরুল

১০

৮ স্বামীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায়, নবম বিয়ের সময় পুলিশের হাতে আটক

১১

পল্লবীতে ন্যাশনাল পিপলস যুব পার্টির উদ্যোগে শিশু-কিশোরদের মাঝে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ

১২

‘শেখ হাসিনা দেশের আলেম সমাজের ওপর নির্যাতনকে জায়েজ বানিয়েছিল’

১৩

ভারতের চেয়ে কম শুল্ক আরোপ, রপ্তানিতে সুবিধাজনক অবস্থানে বাংলাদেশ

১৪

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবার পরামর্শে দেশ চালাবে : নজরুল ইসলাম

১৫

পর্যটকবাহী হাউসবোটে ফেরি করে মদ বিক্রি

১৬

চাঁদার টাকা না পেয়ে প্রবাসীর স্ত্রীকে পৈশাচিক কায়দায় খুন

১৭

কাজ না-ও হতে পারে, তারপরও রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা দেবেন ট্রাম্প

১৮

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে এখনও সুস্পষ্ট ঘোষণা পাইনি: সালাহউদ্দিন

১৯

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি নিয়ে প্রেস সচিবের ব্যাখ্যা

২০