রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখায় ভারত নিয়ে ‘বিরক্ত’ যুক্তরাষ্ট্র: মার্কো রুবিও
প্রকাশিত: ১ আগস্ট ২০২৫ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখায় ভারত সরকারের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ফক্স নিউজ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুবিও বলেন,
“রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি ওয়াশিংটনের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্কের একটি বিরক্তিকর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
এর একদিন আগেই, বুধবার (৩০ জুলাই), মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ভারত থেকে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হবে।
পাশাপাশি, রাশিয়া থেকে অস্ত্র ও জ্বালানি কেনার কারণে ভারতকে ‘দণ্ডিত’ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
🛢️ ‘রাশিয়ার তেল কেনা যুদ্ধকে টিকিয়ে রাখছে’
রুবিও বলেন,
“ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখছে। এটি কার্যত ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পুতিনকে সহায়তা করছে।”
তিনি আরও যোগ করেন,
“আন্তর্জাতিক বাজারে অন্য অনেক বিকল্প থাকা সত্ত্বেও ভারত মূলত রাশিয়ার দিকেই ঝুঁকে আছে। কারণ, নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার তেল সস্তা। কিন্তু এই সস্তা তেলের মূল্য জিওপলিটিক্যালভাবে অত্যন্ত ব্যয়বহুল।”
🇮🇳 ‘ভারতের জ্বালানি চাহিদা বিশাল, তবে…’
সাক্ষাৎকারে মার্কো রুবিও ভারতের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব স্বীকার করে বলেন,
“ভারত যুক্তরাষ্ট্রের একটি কৌশলগত মিত্র। কিন্তু পররাষ্ট্রনীতির প্রতিটি বিষয়ে ১০০% মিল পাওয়া সম্ভব নয়।”
তিনি বলেন,
“ভারতের জ্বালানির চাহিদা বিশাল। তাদের কাছে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রচলিত মূল্যে জ্বালানি কেনার সামর্থ্যও রয়েছে। তবে ভারতের উচিত বিকল্প উৎস বেছে নেওয়া, যাতে রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমানো যায়।”
🏛️ ওয়াশিংটনের অবস্থান স্পষ্ট
ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালীন রাশিয়ার জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বা বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
বিশেষ করে যেসব দেশকে যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত মিত্র হিসেবে বিবেচনা করে, তাদের কাছ থেকে এমন আচরণ দ্বিচারিতা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
📌 প্রেক্ষাপট
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে ভারত সেই সময় থেকেই রাশিয়ার তেল আমদানি বহাল রেখেছে এবং বর্তমানে দেশটি বিশ্বে রাশিয়ার অন্যতম বৃহৎ তেল ক্রেতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
🔍 উপসংহার
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্ক বহু দিক থেকেই দৃঢ় হলেও রাশিয়া–ভারত জ্বালানি সম্পর্ক এখন একটি স্পর্শকাতর কূটনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।
মার্কো রুবিওর এই মন্তব্য তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছে।
মন্তব্য করুন