Fahim hassan
৩১ জুলাই ২০২৫, ৪:২৮ অপরাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ
পাঠক সংখ্যা ৮ জন

ইউ আকৃতির আসন: যেভাবে বদলে যাচ্ছে ভারতের শ্রেণিকক্ষের চিত্র

একটি সিনেমা বদলে দিচ্ছে শ্রেণিকক্ষের আসনবিন্যাস! কেরালার ‘স্থানার্থী শ্রীকুট্টন’ থেকে শিক্ষা বিপ্লব

ডেস্ক রিপোর্ট

ভারতের কেরালা রাজ্যসহ বিভিন্ন রাজ্যের বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের আসনবিন্যাসে ঘটছে এক নীরব, কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ বিপ্লব। এ পরিবর্তনের পেছনে বড় অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে কেরালার চলচ্চিত্র পরিচালক বিনেশ বিশ্বনাথনের ২০২৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম সিনেমা ‘স্থানার্থী শ্রীকুট্টন’।

মালয়ালম ভাষার এ চলচ্চিত্রের ক্লাইম্যাক্সে দেখানো হয় এক অভিনব শ্রেণিকক্ষ—যেখানে ‘সার্কুলার সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট’ বা চক্রাকার আসনবিন্যাসে সবাই সমানভাবে বসে, পেছনের বেঞ্চ আর সামনের বেঞ্চের কোনো ভেদ নেই। শিক্ষার সেই সমতা ও অন্তর্ভুক্তির ধারণাই বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে ভারতের একাধিক রাজ্যের স্কুলে।

ইউ-আকৃতির আসনে সমতার বার্তা

সিনেমাটির প্রভাবে কেরালা, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু ও পশ্চিমবঙ্গসহ অনেক রাজ্যে ইউ-আকৃতির (U-Shaped) শ্রেণিকক্ষ বিন্যাস পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। নতুন পদ্ধতিতে বেঞ্চগুলো অর্ধবৃত্ত বা ইউ-আকৃতিতে সাজানো, যাতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো শারীরিক বা মানসিক দূরত্ব না থাকে।

শিক্ষকেরা বলছেন, এই আসনব্যবস্থায় তারা প্রতিটি শিক্ষার্থীর প্রতি সমান মনোযোগ দিতে পারছেন। শিক্ষার্থীরাও নিজেদের আরও সম্পৃক্ত মনে করছে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে পাঠচর্চায় অংশ নিচ্ছে। এতে শ্রবণ, মনোযোগ ও পারস্পরিক সহযোগিতা বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিনেমা থেকে শ্রেণিকক্ষে

‘স্থানার্থী শ্রীকুট্টন’ সিনেমার গল্পে রয়েছে চারজন দুষ্টু ও পড়ালেখায় অনাগ্রহী শিক্ষার্থীর জীবন। সিনেমার শেষ দৃশ্য শিক্ষকদের মধ্যে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে—সব শিক্ষার্থী যেন সমান সুযোগ ও দৃষ্টিসীমার মধ্যে থাকে। বাস্তবের শিক্ষকরাও সেই চিন্তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে পরিবর্তন এনেছেন ক্লাসরুমে।

গবেষণায়ও মিলছে সমর্থন

ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক ডেকান হেরাল্ড এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রচলিত শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থায় পেছনের বেঞ্চে বসা শিক্ষার্থীদের কম সক্রিয় মনে করা হয়, যা শিক্ষায় বৈষম্য তৈরি করে। ভারতীয় সমাজে এমনিতেই শ্রেণিভেদ বিদ্যমান, সেখানে শ্রেণিকক্ষের বৈষম্য আরও সমস্যাজনক। ইউ-আকৃতির বসার পদ্ধতি এই অসমতা অনেকাংশেই কমিয়ে আনছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা একে অপরের সঙ্গে চোখের যোগাযোগ রাখতে পারে, ধারণা আদান-প্রদান বাড়ে, এবং সহযোগিতামূলক শেখার পরিবেশ গড়ে ওঠে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধনও দৃঢ় হয়।

📌 উপসংহার:

একটি সিনেমা যে সমাজ ও শিক্ষাব্যবস্থাকে এমনভাবে নাড়া দিতে পারে, ‘স্থানার্থী শ্রীকুট্টন’ তার অন্যতম উদাহরণ। এটি শুধু সিনেমার নয়, একটি সামাজিক পরিবর্তনের গল্পও।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বেরোবিতে ২০২৪-২৫ সেশনের চূড়ান্ত ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

এবার শচীনকেও ছাড়িয়ে গেলেন জো রুট

আজ জামায়াত আমিরের ওপেন হার্ট সার্জারি

৫ আগস্টের মধ্যেই ঘোষিত হবে ঘোষণাপত্র: মাহফুজ আলম

সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদা নিতে গিয়ে ধরা

‘ষড়যন্ত্রমূলক’ বৈঠকের তদন্ত চলছে : ডিএমপি

মার্কিন শুল্ক কমলো, যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

আদালতে দুই বাংলাদেশির পক্ষে রায়, ক্ষুব্ধ ইতালির প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশকে শুল্কছাড়, ভারতের পোশাক বাজারের শেয়ারে বড় ধস

অন্তর্বর্তী সরকারকে সাধুবাদ দিলেন মির্জা ফখরুল

১০

৮ স্বামীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায়, নবম বিয়ের সময় পুলিশের হাতে আটক

১১

পল্লবীতে ন্যাশনাল পিপলস যুব পার্টির উদ্যোগে শিশু-কিশোরদের মাঝে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ

১২

‘শেখ হাসিনা দেশের আলেম সমাজের ওপর নির্যাতনকে জায়েজ বানিয়েছিল’

১৩

ভারতের চেয়ে কম শুল্ক আরোপ, রপ্তানিতে সুবিধাজনক অবস্থানে বাংলাদেশ

১৪

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবার পরামর্শে দেশ চালাবে : নজরুল ইসলাম

১৫

পর্যটকবাহী হাউসবোটে ফেরি করে মদ বিক্রি

১৬

চাঁদার টাকা না পেয়ে প্রবাসীর স্ত্রীকে পৈশাচিক কায়দায় খুন

১৭

কাজ না-ও হতে পারে, তারপরও রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা দেবেন ট্রাম্প

১৮

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে এখনও সুস্পষ্ট ঘোষণা পাইনি: সালাহউদ্দিন

১৯

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি নিয়ে প্রেস সচিবের ব্যাখ্যা

২০