বাংলাদেশিদের আশ্রয় মামলায় ইইউর রায়: ইতালির ‘বন্দিশিবির’ চুক্তি অবৈধ ঘোষণা, ক্ষুব্ধ মেলোনি
স্টাফ রিপোর্টার | ১ আগস্ট ২০২৫
সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টায় উদ্ধার হওয়া দুই বাংলাদেশির আশ্রয় আবেদন বাতিলের ঘটনায় ইতালির বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালতে দায়ের করা মামলায় বাংলাদেশিদের পক্ষেই রায় এসেছে। শুক্রবার (১ আগস্ট) দেয়া এই ঐতিহাসিক রায়ে আদালত ঘোষণা করেছে, ইতালি কোনো অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আলবেনিয়ার বন্দিশিবিরে পাঠাতে পারবে না।
এই রায়ের পরই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন,
“আবারও বিচারব্যবস্থা, এবার ইউরোপিয়ান পর্যায়ে, নিজেদের এমন জায়গায় বিচারাধিকার দাবি করছে—যেখানে তা তাদের নেই। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা সব দিক দিয়ে কাজ করব।”
তিনি আরও বলেন,
“আদালতের এই সিদ্ধান্ত অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলা এবং জাতীয় সীমান্ত রক্ষার নীতিকে দুর্বল করে দেবে।”
🛂
কী ঘটেছিল?
বাংলাদেশের দুই নাগরিক ইউরোপে প্রবেশের জন্য সমুদ্রপথে ইতালিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। সাগর থেকে উদ্ধার করে তাদের আশ্রয়ের আবেদন কার্যক্রমের জন্য পাঠানো হয় আলবেনিয়ার একটি বন্দিশিবিরে।
তবে সেখানে তাদের আশ্রয় আবেদন বাতিল করা হলে, তারা সেই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ইতালির আদালতে মামলা করেন। বিষয়টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালতে গড়ালে, আদালত আজ রায় দেন তাদের পক্ষে।
⚖️
আদালতের পর্যবেক্ষণ ও রায়
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়:
🤝
ইতালি-আলবেনিয়া চুক্তি কী?
২০২৩ সালে ইতালি ও আলবেনিয়ার মধ্যে একটি বিতর্কিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির আওতায় আলবেনিয়ায় বন্দিশিবির গড়ে সেখানে রাখা হয় সাগরপথে ইতালিতে আসা অভিবাসীদের, বিশেষ করে যারা তথাকথিত ‘নিরাপদ দেশ’ থেকে এসেছে।
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ইতালি তাদের ‘নিরাপদ দেশের তালিকা’ হালনাগাদ করে যেখানে বাংলাদেশ, মিসরসহ আরও কয়েকটি দেশকে যুক্ত করা হয়। ফলে এসব দেশের কেউ সাগরপথে ইতালিতে প্রবেশ করলে, তাদের সরাসরি আলবেনিয়ার বন্দিশিবিরে পাঠানো হচ্ছিল।
🇧🇩
বাংলাদেশের অবস্থান ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
এই রায়ের ফলে ইতালির ‘নিরাপদ দেশ’ নীতির বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। ইউরোপীয় আদালত জানায়,
“শুধু রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কোনো দেশকে ‘নিরাপদ’ আখ্যা দেওয়া আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এর জন্য প্রমাণ ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া প্রয়োজন।”
এ রায় বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নজির হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকেও এই রায়ের প্রশংসা করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন