প্রকাশিত: ১ আগস্ট ২০২৫ | নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে চাঁদার দাবিতে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে। নিহত শাহীনূর আক্তার (২৫) ছিলেন ছলিমাবাদ গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সুজন মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (পিবিআই)।
চাঁদা না দিলে ‘মৃত্যু’— ঘটনার ভয়াবহ বর্ণনা
পিবিআই জানিয়েছে, সুজন মিয়া ও তার সহযোগীরা শাহীনূরের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে, ১৭ জুলাই দুপুরে শাহীনূরের ভাড়া বাসায় গিয়ে তাকে পেটে ছুরি ঢুকিয়ে খুন করে তারা। এরপর ঘরের দরজায় বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায় খুনিরা।
ঘটনার সময় বাসায় শাহীনূরের একমাত্র মেয়েও ছিল না। পরদিন ১৮ জুলাই পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পৌর এলাকার স্টিল ব্রিজসংলগ্ন নজরুল ইসলামের ভাড়া বাসা থেকে।
গ্রেপ্তার ও স্বীকারোক্তি
ঘটনার পর নিহত শাহীনূরের বাবা গিয়াস উদ্দিন বাঞ্ছারামপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মূল অভিযুক্ত সুজন মিয়াকে শনাক্ত করে পিবিআই।
পরে ২৭ জুলাই ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের চাঁন মসজিদ বাগানবাড়ি রোড থেকে সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ৩০ জুলাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
মাদক ব্যবসায়ী সুজন ও তার চক্র
পিবিআই-এর তথ্যমতে, সুজন একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়ার আসর পরিচালনাকারী। হত্যাকাণ্ডে তার আরও দুই সহযোগী জড়িত ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পিবিআই-এর বক্তব্য
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআই জানায়,
“এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত। চাঁদার জন্য হুমকি দিয়ে ব্যর্থ হয়ে সুজন মিয়া শাহীনূর আক্তারকে হত্যা করে। আমরা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করি।”
মানবিক প্রশ্ন এবং বিচারপ্রার্থিতা
নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে এলাকাজুড়ে শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের বিচার দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। এলাকাবাসী বলছে,
“একজন নারীর এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
মন্তব্য করুন